আল-কুরআন মানবতার মুক্তি সনদ হিসেবে বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহ্ তা’আলার এক অমোঘ নিয়ামাত। নবী করীম (I)-এর তেইশ বছর নবুয়তী জীবনে বিভিন্ন ঘটনা পরিক্রমায় এবং প্রয়োজনের তাগিদে আল্লাহ্ তা’আলা রূহুল কুদস জিবরাইলের মাধ্যমে যে অহী প্রেরণ করেছেন তার সমষ্টি হলো আল-কুরআন। এটি বিশ্বের জনগোষ্ঠী বিশেষ করে মুসলমানদের জীবন পরিচালনার জন্য প্রধান ও মুখ্য উৎস। বিশ্বের সর্বশেষ ও শ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব হওয়ায় এটি মানব জীবনের সকল উদ্বৃত্ত সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশ্নাতীতভাবে আকর হিসেবে স্বীকৃত। পরিবেশ ও পরিস্থিতির বিবেচনায় আল-কুরআনকে জানবার, বুঝবার এবং সম্যকভাবে অনুধাবন করার জন্য প্রয়োজন পড়ে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের মত এক সুবিন্যস্ত অভিজ্ঞানের যা আরবী পরিভাষায় তাফসীর নামে খ্যাত। নবী করীম (5) ছিলেন স্বয়ং আল কুরআনের প্রথম ও প্রধান তাফসীরকারক। তাঁরই আদর্শ অনুসরণ করে সাহাবীগণ থেকে নিয়ে পরবর্তীকালে অগণিত ব্যক্তিত্ব তাফসীর চর্চায় আত্মনিয়োগ করেছেন। ফলে তাফসীর অভিজ্ঞানটি মুসলিম সমাজে বিস্তৃতি লাভ করেছে। এসব নিবেদিত প্রাণ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা অতীব প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এতে করে পার্থিব জীবনে কল্যাণের সন্ধান পাওয়ার সাথে সাথে পারলৌকিক জীবনে পরম পরিত্রাণ লাভ করা সম্ভব হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেন এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে অত্যন্ত শ্রম দিয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে মুফাসসির পরিচিতি শীর্ষক যে গ্রন্থটি প্রণয়ন করেছেন তা তথ্যবহুল ও পাণ্ডিত্যপূর্ণ হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। গ্রন্থটিতে ব্যবহৃত বাক্যের শব্দচয়ন ও গাথুনী অত্যন্ত সুদৃঢ় এবং ভাষা সাবলীল ও সুখপাঠ্য। ইতোমধ্যে ড. হোসেন নিজেকে একজন সফল শিক্ষক ও নিষ্ঠাবান গবেষক হিসেবে উপস্থাপিত করতে পেরেছেন বলে আমি মনে করি। আমার স্নেহভাজন ছাত্র হিসেবে তার জ্ঞান চর্চাকে আরো শাণিত করে তুলতে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট দু’আ করছি। মুফাসসির পরিচিতি গ্রন্থটি ছাত্র-ছাত্রী, গবেষক ও সাধারণ বোদ্ধা পাঠকদের প্রভূত উপকারে আসবে বলে আমার বিশ্বাস। ড. হোসেন এরূপ মহৎ কাজের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে গ্রন্থটির বহুল প্রচার কামনা করছি।
There are no reviews yet.